২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গাইবান্ধা-৩ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী নির্বাচিত হতে ফরম সংগ্রহ করছিলেন অনেক নেতাকর্মী। এর মধ্যে ছিলেন অরজিনা পারভীন চাঁদনী, যিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন।
অরজিনা তখন বলেছিলেন, তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার বাবা, দাদা এবং নানা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ছিলেন, এবং তিনি নিজেও বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিলেন।
তবে ৫ আগস্ট একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছিল, যার ফলে অরজিনা তার রাজনৈতিক অবস্থান বদলান। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশে পরিস্থিতি বদলে যায়, এবং রাজনৈতিক দলগুলো নতুন করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। এরমধ্যে বিএনপিও তৃণমূল কমিটি ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করে। অরজিনা এক সময়ের আওয়ামী লীগ কর্মী এখন বিএনপিতে যোগ দেন এবং পলাশবাড়ী উপজেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতির পদ গ্রহণ করেন।
অরজিনা তার নতুন রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে বলেন, “আমি বিএনপি পরিবারের সন্তান। আমার বাবা দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন এবং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি, ইউনিয়ন ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, এবং থানা কৃষক দলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।”
এদিকে, কমিটির ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কর্মী হিসেবে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাছিমা বেগমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। বিতর্কিত কমিটি ঘোষণার পর তৃণমূল নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই কমিটি টাকার বিনিময়ে গঠন করা হয়েছে এবং অনুপ্রবেশকারীদের পদ দেওয়া হয়েছে।
তারা এই অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে একটি ফোন কল প্রকাশ করেন, যেখানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম মণ্ডলকে বলছেন, “ব্যবসা করতে গেলে আওয়ামী লীগের সাথেই করা লাগবে। এর জন্য কেন্দ্রীয় সাহায্যও প্রয়োজন, টাকা-পয়সা সব চাঁদনী খরচ করবে।”
তবে, সমালোচনার পর জেলা মহিলা দলের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমীন শোভা কমিটি বিলুপ্ত করেন। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ফরিদা ইয়াসমীন শোভা কিংবা আব্দুস সালাম মণ্ডল।
গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুন্নবী টিটুল জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, অভিযোগের তদন্তের জন্য কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি এখনও।